পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপচার্য নিযুক্ত করা হয়। ড. জুবেরী ও মাদার বখশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। ২৯৮ হেক্টর জমির ওপর নির্মিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করেন আর্কিটেক্ট জন এ. জোমানেক।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে দুটি প্রশাসনিক ভবন, সিনেট ভবন, ৮টি একাডেমিক ভবন, ১৫টি আবাসিক হল, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবন, আইবিএস-এর প্রশাসনিক ভবন ও ডরমিটরি, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় মিলনায়তন, শিক্ষক-ছাত্র সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, রাকসু ভবন, মেডিক্যাল সেন্টার, বিশ্ববিদ্যালয় ছাপাখানা, জুবেরী ভবন, ক্যাফেটারিয়া, বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ ভবন, চারুকলা বিভাগ, রেল স্টেশন, শহীদ মিনার, শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা, মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘সাবাস বাংলাদেশ’ ইত্যাদি।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ সহস্রাধিক এবং শিক্ষকের সংখ্যা ৮ শতাধিক। এছাড়াও এখানে দুই সহস্রাধিক কর্মকর্তা/কর্মচারী রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর বেশ কয়েকজন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব এখানে অধ্যাপনা করেন। যাদের মধ্যে- ভাষাবিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, ইতিহাসবিদ ডক্টর এ. আর মল্লিক, ড. আব্দুল করিম ও ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবন ১৯৬৪ সালে নির্মিত হয়। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রন্থাগার। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় খুবই সক্রিয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিভাগে ২৭ জন শিক্ষক আছেন। শরীরচর্চা বিভাগের অধীনে ২৫,০০০ আসনবিশিষ্ট ১টি স্টেডিয়াম, ২টি জিমনেসিয়াম, ১টি সুইমিংপুল, ৪টি ফুটবল খেলার মাঠ, ১টি হকি মাঠ, ৪টি লন টেনিস কোর্ট, ২টি বাস্কেটবল কোর্ট, ১টি স্কোয়াশ কোর্ট আছে।
প্রতিটি জাতীয় আন্দোলন ও সংগ্রামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ অংশগ্রহণ করেছে। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডক্টর শামসুজ্জোহা প্রক্টর হিসেবে শান্তিরক্ষার দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হলে আইয়ুব খানের পতন ত্বরান্বিত হয়।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ জন শিক্ষক ১৫ জন কর্মচারী এবং ৯ জন ছাত্র শহিদ হন। গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ মনোরম পরিবেশে স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঘুরে বেড়ানোর জন্য অনেকেই এখানে এসে থাকেন।