পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
আনুমানিক ১৬৯১ সালে মোঘল শাসনামলে রাজা মহামানিক্য দত্ত রায় চৌধুরী হুগলী থেকে আসাম যাওয়ার পথে কালিদহ সাগরের স্থলভূমি ভাটির প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ হয়ে সুখাইড়ে জায়গির কেনেন। ওই সময় থেকেই সুখাইড়ে বাড়ি নির্মাণ পরিকল্পনা শুরু করেন রাজা মহামাণিক্য দত্ত। পাশে পাহাড়ী নদী বৌলাই, হাওরের থৈ থৈ ঢেউ, বন ঝোপ আর সবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশে সমৃদ্ধ থাকায় ১৬৯৫ সালে সুখাইড়ে ২৫ একর জমির ওপর বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন জমিদার মোহনলাল রায় চৌধুরী, জমিদার রাজীব রায় চৌধুরী এবং কেশব রায় চৌধুরী।
কয়েক পুরুষের চেষ্টায় শেষ হয়েছিল বাড়ির নির্মাণকাজ। জমিদারি যুগে সুনামগঞ্জ ছিল ৩২টি পরগনায় বিভক্ত। দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলীর কারণে সুখাইড় জমিদার বাড়ি হাওর রাজ্যের রাজমহল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিল। এ জমিদারির বিস্তৃতি ছিল দক্ষিণে ঘাগলাজুর নদীর উত্তরপাড়, উত্তরে বংশীকুন্ডা, পশ্চিমে ধর্মপাশা এবং পূর্বে জামালগঞ্জ। এক সময় এ বাড়ির মালিকানায় ছিল কালা পানির বিল, ফিরা গাঙ্গের বিল, ধানকুনিয়া বিল, চারদা বিল, কাইমের দাইড়, সোনামোড়ল, পাশোয়া, ছাতিধরা, রাকলা, বৌলাই, নোয়ানদী, চেপ্টা এক্স হেলইন্নাসহ ২০ টিরও বেশি জলমহল।
গজারিয়া নদীর উত্তরপাড় থেকে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজবাড়ির সীমানা। জমিদারি প্রথা অনেক আগে বিলুপ্ত হলেও রাজবাড়ি বাংলোঘর, কাচারি ঘর, জলসাঘর, গুদামঘর ও সদরমহল, অন্দরমহল, হাতিশাল, ঘোড়াশাল, খাসকামরাসহ আঙিনার পুকুরসহ বিস্তৃত সীমানা এখনো বাড়িটিকে বেশ আকর্ষণীয় করে রেখেছে।